বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এডাব-এর আলোচনা সভা
- ADAB
- June 5, 2024
- 6:00 pm
- No Comments
‘ভূমি পুনরুদ্ধার, খরামুক্ত টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ৫ জুন এডাব (এসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ)-এর আয়োজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এডাব-এর ভাইস-চেয়ারপারসন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজেদা শওকত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় সংসদ সদস্য, শাহিদা তারেখ দীপ্তি। এডাব পরিচালক জনাব একেএম জসীম উদ্দিনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডাব-এর কর্মসূচি পরিচালক জনাব কাউসার আলম কনক।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের ৪২ টির মধ্যে মাত্র ২৬টি খাল বেঁচে আছে। সেগুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। শব্দের মাত্রা ১১৯ ডেসিম্যাল, যা স্বাভাবিকের দ্বিগুণের বেশি। রাজধানীর পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান উপাদান বায়ু দূষণ। এ ক্ষেত্রে বিশ্বে প্রথম এবং দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ঢাকা।’
এ সময় তিনি গাছ কাটা বন্ধ, আবাসন ও শিল্পায়নের নামে বালু ভরাট বন্ধ; অবৈধ খাল দখল বন্ধ; জলাভূমি সংরক্ষণ; ইটভাটা বন্ধ; কৃষি ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত সার কীটনাশক ব্যবহার বন্ধের সুপারিশ জানান।
আলোচনা সভায় বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বরফ গলে যাওয়া, সমূদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া, লবনাক্ততা, লবনাক্ত পানির অনুপ্রবেশ, মানুষের স্থানান্তর বৃদ্ধি, তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও তাপদাহ বৃদ্ধি, ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি উল্লেখ করেন। যার ফলে, নারীদের বন্ধাত্ব্যসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি, কৃষি, অর্থনীতি, প্রাণী সম্পদ ও মৎস্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এছাড়া, প্রভাবশালী ব্যক্তিগণের ভূমি দখল, জলাভূমি ভরাট, নদী-খাল ও পাহাড় দখল, গাছ-পালা ও মাটি কেটে অবৈধ বসতি স্থাপন করা, শিল্পের বর্জ্য ফেলে পানি ও মাটি দুষণ করছে। পরিবেশ রক্ষায়, বেশী বেশি গাছ লাগানো, ছাদ কৃষিকে উৎসাহিত করতে কর হোল্ডিং ট্যাক্স রেয়াত চালু করা ও বসত ভিটায় বৃক্ষরোপন, সামাজিক বনায়নে স্থানীয় জনগণের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা; নদী খনন, বাধ নির্মাণ ও পাশাপাশি, দুর্নীতি রোধ ও সুশাসন নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব দিয়ে সরকার, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও এনজিও কর্মীদেরকে একত্রে কাজ করার জন্য সকলে মত প্রকাশ করেন।
বিভিন্ন আইন কঠোর হস্তে প্রয়োগ ও আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে প্রধান অতিথি আলোচনা সভায় উত্থাপিত বিষয়সমূহ সমাধানের জন্য জাতীয় সংসদে উত্থাপন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
“যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তারাই পরিবেশকে সবচেয়ে বেশি আগলে রাখেন। আমি প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি গাছকে সন্তানের মতো আগলে রাখেন।”
- জান্নাত-এ ফেরদৌসী লাকি, যুগ্ম সম্পাদক ও সমন্বয়ক, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাস।
অন্যান্যদের মধ্যে আলোচক হিসাবে ছিলেন যথাক্রমে শামীমা চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক ও মিডিয়া গবেষক; জান্নাত-এ ফেরদৌসী লাকী, যুগ্ম সম্পাদক ও সমন্বয়ক, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাস; মোঃ আব্দুল আলীম শেখ, জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি, সিসিডিবি।
সিনিয়র সাংবাদিক ও মিডিয়া গবেষক শামীমা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যে সমস্যাগুলোর কথা বলছি সেগুলো সমাধান হচ্ছে না কেন? পাঁচ বছর আগে যে সমস্যাগুলো ছিল, এখন সেগুলো আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা অনেক আলোচনা করলেও পলিসি লেভেলে এসব সমস্যা আলোচনায় আসে না।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য শাহিদা তারেক দীপ্তি বলেন, গত এক মাসে এত তাপপ্রবাহ দেখা গেল। কতজন এসিতে থাকে? যারা কুড়ে ঘরে, টিনের ঘরে থাকে তাদের কি অবস্থা? অনেকেই হিটস্ট্রোকে মারা গেছে। পরিবেশ শুধু গাছ নয়, পরিবেশকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
“বঙ্গবন্ধু বলতেন, ‘‘আমার কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে।’’ আজকে তো দেশে কৃষক বাঁচছে না।”
- বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজেদা শওকত আলী, ভাইস-চেয়ারপারসন, এডাব।
সভাপতির বক্তব্যে এডাবের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজেদা শওকত আলী বলেন, ‘সবার আগে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। মানসিকতার পরিবর্তন না হলে যতই আইন করা হোক কোনো কাজে আসবে না।
প্রোগ্রামের কিছু মিডিয়া কভারেজ: